"মায়ের ভালোবাসা নিয়ে বেদনাদায়ক গল্প"
"মায়ের ভালোবাসা নিয়ে বেদনাদায়ক গল্প"
মায়ের ভালোবাসা নিয়ে বেদনাদায়ক গল্প:-
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
পরম করুনাময় আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করছি, হ্যালো স্ট্রিম প্রিয় বন্ধুরা! আশা করি আপনারা সবাই সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভালো আছি সুস্থ আছি।
"মা" শব্দটি এক অক্ষরের হতে পারে, কিন্তু এর মধ্যে রয়েছে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। পৃথিবীতে মা বাবা সন্তানকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। পৃথিবীতে যদি স্বার্থ ছাড়া কেউ ভালোবাসে তাহলে তার নাম হচ্ছে মা-বাবা। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি মায়ের বেদনাদায়ক গল্প শেয়ার করতে এসেছি, তো বন্ধুরা চলুন শুরু করা যাক.. মা-বাবার আদরের একটি মাত্র সন্তান ছিল, ছেলেটির জন্মের দুমাস পরে তার বাবা মারা যায়। ছেলেটির মা অনেক কষ্ট করে ছেলেকে লালন পালন করতে থাকে। ছেলেটি ছোটবেলায় তার মাকে খুবই ভালোবাসতো। যখন একটু বড় হতে শুরু করে তখন মায়ের উপর থেকে তার ভালোবাসা কমতে শুরু করে।
ছেলেটি দিন দিন বড় হতে লাগলো, এখন সে স্কুলে যেতে পারে। মা যখন তাকে স্কুলে নিয়ে যায় তখন সে একটু লজ্জাবোধ করে, এই জন্য যে, তার মায়ের এক চক্ষু ছিলো না । স্কুলে এখন তার বন্ধু হয়ে গেছে, তার বন্ধুরা যদি দেখতে পারে যে, তার মায়ের একচক্ষু নেই, তাহলে তার একটা লজ্জার ব্যাপার মনে করত। এজন্য সে তার মাকে স্কুলে যেতে নিষেধ করল। মা সবকিছু বুঝেও না বোঝার ভান করে শুধু কান্না করেই মনকে শান্ত করল। ছেলেটি দিন দিন বড় হতে লাগলো এক সময় সে যুবকে পরিণত হলো। ছেলেটি এখন নিজেই তার মাকে উপহাস করতে লাগলো। অল্প কিছুদিন পর ছেলেটির বিয়ের বয়স হলো, ছেলেটি বিবাহ করে নিয়ে আসলো।
ছেলেটির স্ত্রী তার মাকে দেখে বলতে লাগলো, তোমার মায়ের এক চক্ষু কানা দেখতে কেমন যেন ডাইনির মত লাগে। এই কথাটি দৈনন্দিন বলতে থাকে, মা শুধু কান্না করেই দিলকে শান্ত করে রাখে। হঠাৎ করে একদিন ছেলে তার মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিল। মায়ের এখন বয়স হয়ে গিয়েছে, তাই সে কোন কাজকর্ম করতে পারেনা। তখন মা কোন এক জায়গায় চলে গেল, ছেলেটি আর তার মায়ের কোন খোঁজ খবর রাখল না। একদিন ছেলেটির জন্মদিন জেনে তার মা ছেলেটির জন্য একটি চিঠি ও একটি ফুল নিয়ে আসলো। ছেলেটি যখন দরজা খুলে দিল, তখন মা তার হাতে একটি চিঠি ও একটি ফুল দিয়ে আবার তার পথে যাত্রা শুরু করলো।
"মায়ের ভালোবাসা নিয়ে বেদনাদায়ক গল্প" |
ছেলেটি চিঠি খুলে পড়তে লাগলো, চিঠির মধ্যে লেখা ছিল এক আশ্চর্য ঘটনা! ছেলেটি পড়ল আর চক্ষু দিয়ে পানি ছেড়ে দিল। চিঠির মধ্যে লেখা ছিল; বাবু তুমি যখন ছয় মাসের শিশু ছিলে তখন খাট থেকে পড়ে গিয়ে তোমার এক চোখ অন্ধ হয়ে যায়, ডাক্তার বলেছিল আর কখনো ভালো করা সম্ভব নয়। তবে যদি কেউ চক্ষু দান করে তাহলে ভালো করা সম্ভব। তখন আমি কোন প্রকার বিলম্ব না করে, ডাক্তারকে বললাম আপনি আমার চক্ষু আমার ছেলেকে লাগিয়ে দেন।
তখন আমার চক্ষু প্রতিস্থাপন করে তোমাকে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এবং তোমার চক্ষু ভালো হয়ে যায়। আর সেদিন থেকেই আমার একটি চক্ষু না থাকাই আমার সুন্দরতা নষ্ট হয়ে যায়। বেটা! আমি কোনদিনই তোমার খারাপ চাইনি। একটা কথা মনে রাখবে! মা বাবা দেখতে অসুন্দর হতে পারে, কিন্তু তাদের হৃদয় সূর্যের আলোর থেকেও পরিষ্কার ও স্বচ্ছ। এই চিঠিটি পড়তে পড়তে ছেলেটি হাউমাউ করে কেঁদে দেয়, কাঁদতে কাঁদতে মায়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে।
কিন্তু এতক্ষণে মা তো আর বসে নেই, সে হাঁটতে হাঁটতে কোথায় চলে গেছে আর খুঁজে পাচ্ছে না। তখন ছেলেটি খুঁজতে খুঁজতে তার মাকে একটি বট গাছের নিচে পেল। কিন্তু এতক্ষণে তার মা আর জীবিত নেই মৃত অবস্থায় পেয়েছে। চক্ষু দিয়ে এখনো জ্বল জ্বল করে পানি ঝড়ছে। মনে হচ্ছে যেন কিছুক্ষণ আগেই মারা গিয়েছে। বট গাছ তলায় কিছু লোকের ভিড়ও জমেছে। ছেলেটি শুধু আফসোস আর আফসোস করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারলো না।
তাই বন্ধুরা কোনোদিনও এমন কাজ করোনা যেটাতে তোমার মাতা-পিতার দুঃখ হয়। সর্বদা মাতা-পিতাকে খুশি রাখার চেষ্টা করবে। মাতা-পিতাকে হাসি- খুশি দেখার আনন্দ পৃথিবীর যে কোনো সৌন্দর্যকে হার মানায়।
লেখাটি পড়ে অবশ্যই আপনার মূল্যবান মন্তব্য জানাবেন।
লেখাটি পড়ার জন্য সকলকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url